ভার্চুয়াল শিক্ষার সুযোগ-সুবিধ
ভার্চুয়াল শিক্ষা গ্রহণ করার যেমন অপ্রয়োজনীয় দিক রয়েছে তেমনই এর বিভিন্ন সুযোগ-সু্বিধাও রয়েছে! এই যুগের একজন বুদ্ধিমান মানুষ হিসেবে আমাদের উচিত এই সুযোগ-সুবিধাগুলির দিকে ফোকাস করে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হলো ভার্চুয়াল শিক্ষার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা।
এক্সট্রা সুবিধা প্রদান করে
ভার্চুয়াল ক্লাস আপনাকে দিবে এক্সট্রা কিছু সুযোগ সুবিধা। যা আপনি সাধারণত কোনো অফলাইন ক্লাসে খুঁজে পাবেন না। কিছু উদাহরণ দিতে পারলে ব্যাপারটি বুঝতে আরো সুবিধা হবে। ভার্চুয়াল ক্লাসে যদি টপিকের উপর বিভিন্ন ভিডিও পাবলিশ করাটাই ক্লাস করানোর আওতায় পড়ে তাহলে যে কোনো শিক্ষার্থী যদি একটি ক্লাস মিস করেও ফেলে তবে সে ইজিলি সেই ক্লাসটি নিজের সময় মতো করে নিতে পারবে।
ভার্চুয়াল ক্লাসের ক্ষেত্রে যেহেতু শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা করলেই নিজেদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান Google কিংবা YouTube থেকে করে নিতে পারে সেহেতু শিক্ষকের ঝামেলাটাও খানিকটা কমে আসে। শিক্ষার্থীরা মনের মাঝে পড়ার টপিক নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন নিয়ে অযথা চিন্তা করে সেক্ষেত্রে দ্রুত, সহজে ও সুলভে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। ফলে পড়াশোনা সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান খুব দ্রুত পাওয়া যায়।
এটি যেকোনো বিষয় শেখার স্বাধীনতা দেয়
ভার্চুয়াল ক্লাস বা শিক্ষা আপনাকে যেকোনো বিষয় শেখার স্বাধীনতা সক্ষম। এমনকি আপনি চাইলে এর সাহায্যে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলিও সেরে নিতে পারেন। অফলাইনে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্লাসে উপস্থিত হতে না পারলেও অনলাইন ক্লাসে ঠিকই উপস্থিত হয়ে আদায় করে নিচ্ছে বাড়তি পড়াটুকুও। শিক্ষকের কাছে যেকোনো বিষয় শেখার স্বাধীনতা থাকায় শিক্ষার্থীরা অফলাইনের মতো ভার্চুয়াল শিক্ষা ক্ষেত্রেও এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলির ব্যাপারেও সতর্ক থাকছে।
করোনাকালীন লকডাউনে শিক্ষার্থীদের হাতে প্রচুর সময় থাকার পাশাপাশি সরাসরি স্কুল, কলেজে শিক্ষকদের ছোটাছুটি করতে হয় না বলে শিক্ষকেরাও শিক্ষার্থীদের বাড়তি পাঠদানের দিকে ঝুঁকছে। ফলে ভার্চুয়াল ক্লাস সম্পর্কিত যে-সমস্ত দো-টানা অবিভাবকদের মনে পূর্বে কাজ করেছে তা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সেই সাথে ভার্চুয়াল মাধ্যম ব্যবহার করে বাড়তি পড়া আদায়ের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ডাটা, নেটওয়ার্ক স্পিড ও টেকনোলজিক্যাল সুবিধার কারণে যেনো কোনো বাধাই বাধা মনে করছে না শিক্ষার্থীরা।
এতে আপনার অনেক সময় বাঁচবে
ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু আপনার সময় বাঁচাতেও সাহায্য করবে৷ অফলাইন ক্লাস করতে গিয়ে যেখানে একজন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতেই সময় নষ্ট করে ফেলে তারাও এই ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থার সাহায্য নিয়ে সময় বাঁচিয়ে পড়াশোনা চালাতে পারছে। গাড়ির বা রিকশার জন্য অপেক্ষার পাহাড় ফেলে, রেডি হওয়ার ঝামেলা ছেড়ে সময় মতো নিজের চেয়ার টেবিলকেও ক্লাস বানিয়ে শিক্ষার্থীরা যোগ দিচ্ছে ভার্চুয়াল ক্লাসে।
সময় বাঁচানোর দিক দিয়ে ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা করোনা ঝুঁকির বিষয়টিকেও হ্যান্ডেল করছে একাই! শিক্ষার্থীরা যেহেতু ঘরে বসে ক্লাস করছে সেহেতু করোনার ঝুঁকি কমছে শতভাগ! পাশাপাশি এই কঠিন সময়টিতে পড়াশোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকেও প্রাধান্য দিতে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে না।
এটি একটি ব্যয় বহুল শিক্ষার বিকল্প
ব্যয় বহুল শিক্ষার বিকল্প হিসেবে বেশ ভালোই কাজ করছে ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা। গাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে ড্রেস-আপ, প্রতিদিনকার এক্সট্রা খরচটুকু বাঁচিয়ে আরামসে ঘরে বসেই নিজের পড়াশোনাকে চালিয়ে নিতে পারছে শিক্ষার্থীরা। যা সম্ভব হচ্ছে একমাত্র ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে।
রাস্তা যাতায়াত করে টাকা খরচ করে স্কুলে গিয়ে ক্লাসে যোগ দেওয়াটাই হলো একজা অফলাইন শিক্ষার্থীর নিত্যদিনকার রুটিন। কিন্তু ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা এই খরচের পাহাড় থেকে একজন শিক্ষার্থী এবং তার অবিভাবককে মুক্তি দিতে সক্ষম হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকার যাতায়াত সহ অন্যান্য খরচ সাশ্রয় হওয়ার ব্যাপারটি তো আছেই!
একই সময়ে কাজ এবং অধ্যয়ন করার সুযোগ দেয়
ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা আপনাকে একই সময়ে কাজ এবং অধ্যয়ন করার সুযোগ দেয়। করোনার এই সময়টিকে অনেকেই কাজে লাগাতে ছোট-খাটো বিভিন্ন হোম-প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। ফলে ভার্চুয়াল ক্লাসটাকেও অনেকেই কাজে লাগাতে পছন্দ করে। ক্লাস করতে করতে বোর হলে টুক করে সেই পছন্দের প্রজেক্টকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করে দেওয়া যায়।
আবার ভার্চুয়াল ক্লাস করতে করতে যদি নিজের ঘরের কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ পড়ে তবে সেটিও সুযোগ বুঝে করে ফেলা যায়। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষকের অনুমতি নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনুমতি ব্যাতীত কোনো কাজেই হাত দেওয়া যাবে না।
উপসৎহার
পুরো পৃথিবী জুড়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের ভার্চুয়াল দূর্বিভাজন কমিয়ে আনতে কার্যকরী ব্যবস্হা নেয়া প্রয়োজন। ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্হার সুফল-সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবক সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।