যেকোনো ব্যাক্তিকে কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে শেখানো যায়?

যেকোনো ব্যাক্তিকে কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে শেখানো যায়। সামনা-সামনি শিক্ষা কার্যক্রমের চেয়ে অনলাইন শিক্ষার সাথে খাপ খাওয়ানো যাদের কাছে অনেকটা কঠিন মনে হয় আজকের আর্টিকেলটি মূলত তাদের জন্যই।

একজন শিক্ষক কিংবা অবিভাবক হিসেবে আপনি অনলাইনে শিক্ষাদানের মাধ্যমে যে সমস্যা বাধার সম্মুখীন হোন সে-সমস্ত বাধা এবং তার সমাধান নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করবো; কিভাবে যেকোনো ব্যাক্তিকে অনলাইনের মাধ্যমে শেখানো যায়।

টাইম ম্যানেজম্যান্ট করে নিন

আপনি কি জানেন অনলাইনে শিক্ষাদানে অফলাইন শিক্ষার চেয়ে বেশি সময় লাগে? অনলাইন শিক্ষাকে আদতে অল্প সময়ে শিক্ষণ মনে হলেও খুব একটা যে কম সময় এখানে ব্যয় হয় তা কিন্তু নয়। সুতরাং অনলাইনের মাধ্যমে কাউকে কোনো কিছু শেখানোর আগে সেই টপিকের উপর একটি টাইম ম্যানেজম্যান্ট করে নিন।

একজন শিক্ষক হিসেবে এক্ষেত্রে নিয়মিত ভার্চুয়াল ক্লাসের সময় হোস্ট করা আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যদি কোনো কারণে যদি শিক্ষার্থীরা সেই নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত না হয় বা কোনো কারণে ক্লাসের ফাঁকে বিরতি নেয় সেক্ষেত্রে আপনি নোটিশ বোর্ড হিসেবে ইমেইলকে কাজে লাগাতে পারেন। যেহেতু অনলাইন ক্লাসে অফলাইন ক্লাসের চাইতে বেশি সময় লাগে সেহেতু পুরো ক্লাস জুড়ে স্মার্টলি সময় বাঁচানোর চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে আপনি সাধারণ প্রশ্নকে পোস্ট আকারের পেশ করার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে একটি থ্রি-ডি সেট আপ করে রাখতে পারেন।

রুটিন তৈরি করুন

অনলাইন ক্লাস শুরু করার আগে রুটিন তৈরি করে নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বলে আমি মনে করি। এতে ধাপে ধাপে পড়া ফুরানোর ফলে কমফোর্ট ফিল করা যায়। একজন শিক্ষক হিসেবে আপনিও এই টেকনিক ব্যবহার করতে পারেন। পুরো ক্লাস জুড়ে আপনি যে টপিক নিয়ে আলোচনা করবেন সেই টপিকের কোন কোন পয়েন্ট জটিল এবং কোন কোন পয়েন্ সহজ তা আগে ঠিক করে নিন।
এবার সেই কঠিন পয়েন্টগুলিকে আলাদা করে প্রতি পয়েন্টের জন্য পর্যাপ্ত সময় সেট করে নিন। বাকি রইলো সহজ পয়েন্টের ব্যাপার! এক্ষেত্রে কিছুটা কম সময় সেট করলেও ক্ষতি নেই। শুরুর দিকে অভিনন্দনসূচক পর্ব, মাঝের দিকের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং শেষের দিকের বিদায়ের আয়োজনটিকেও মাথায় রেখে একটি রুটিন তৈরি করে নিন।

অগ্রগতি যাচাই করুন

অনেকের কাছেই অনলাইনের মাধ্যমে কোনো কিছু শেখাতে হলে যে শিখতে তার অগ্রগতি যাচাই করা খুব একটা কঠিন লাগে। কেননা সরাসরি কোনো কমিউনিকেট করতে পারায় বোঝা যায় না কে কতটুকু আগালো। তবে এই অগ্রগতি যাচাই করার পর্বটি কিন্তু প্রতিটি দূর্বল কিংবা পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীকে নতুনভাবে এগিয়ে নিতে খুবই কার্যকর ভুমিকা পালন করে।

আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে যারা পরবর্তী অনলাইন ক্লাস করার সময় যারা অগ্রগতি যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা এই গুরুত্বপূর্ণ টেকনিকটি প্রতি সপ্তাহের শুরতে একবার এবং শেষে একবার করে প্রয়োগ করতে পারেন। পরবর্তী রুটিন সেই অগ্রগতি যাচাইয়ের ফলাফলের উপরই ভিত্তি করে তৈরি করার চেষ্টা করলে আশা করি আপনার অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমটি শতভাগ সফল হবে।

অনলাইনের মাধ্যমে শেখানোর জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম

টেকমিন্ট

Techmit এর সাথে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। অনেকেই বিভিন্ন প্রফেশনাল কাজে এই মিডিয়াটি ব্যবহার করে থাকেন। এই মিডিয়াটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যার কারণে এর লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী রয়েছে যারা নিয়মিত মিডিয়াটির সাহায্যে অডিও কল ছাড়াও স্ক্রিন শেয়ারিং এবং ভিডিও কলিংয়ের সুযোগ-সুবিধাও নিচ্ছে। চাইলে এই সুবিধাকে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটির সাউন্ড কোয়ালিটি অন্যান্য মিডিয়ার চাইতে তুলনামূলক ভালো। ফলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে সাউন্ড প্রবলেম নিয়ে খুব একটা ভাবতে হবে না।

মিডিয়াটির টেকমিন্ট টেস্ট কল বা ইকো/সাউন্ড টেস্ট সার্ভিস ব্যবহার করে আপনি চাইলে ক্লাস শুরুর পূর্বে নিজের সাউন্ড কোয়ালিটিও চেক করে নিতে পারেন। অনলাইনে কাউকে কোনোকিছু শেখানোর সময় আপনি যদি স্টুডেন্টকে আপনার স্ক্রিনের সাহায্যে কিছু দেখাতে চান বা তারা তাদের স্ক্রিনের সাহায্যে আপনাকে কিছু দেখাতে চায় তবে আপনি এর স্ক্রিন শেয়ারিং ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন।

অনলাইন হোয়াইটবোর্ড

মূলত এই অনলাইন হোয়াইটবোর্ড মিডিয়াটি ঠিক ব্ল্যাকবোর্ড এবং হোয়াইটবোর্ডগুলির মতো। আমরা অফলাইন ক্লাসে যেমনটা বোর্ডের সাহায্য নিয়ে থাকি... অনলাইন হোয়াইটবোর্ড মিডিয়ার কাজটিও ঠিক তেমন।

এর সাহায্যে আপনি চাইলে আপনার স্টুডেন্টকে একটি বোর্ডে বিভিন্ন উত্তর প্রদান করানোর পাশাপাশি তাদের যাচাই করে নিতে পারেন। পাশাপাশি এই সফটওয়্যারটিতে আপনি বিভিন্ন লিংক শেয়ারিং, ই-বুক শেয়ারিংয়ের মতো সুবিধাও পেতে পারেন।